আরও দেখুন
তবে কিছু মৌলিক বিষয়—যেমন কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর মুদ্রানীতি নমনীয় করণ এবং কমতে থাকা মুদ্রাস্ফীতি—ঝুঁকিপূর্ণ অ্যাসেটগুলোর ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে, যার মধ্যে বিটকয়েনও রয়েছে। ২০২৪-২০২৫ সালে বিটকয়েনের মূল্য বৃদ্ধির পেছনে যেসব প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী বড় ভূমিকা রেখেছিল, তারা বর্তমানে কিছুটা সতর্ক রয়েছে এবং তাদের ক্রিপ্টোকারেন্সি হোল্ডিং বা পজিশন বাড়ানোর ব্যাপারে তাড়াহুড়ো করছে না। তবে কিছু ইতিবাচক সংকেত ইতোমধ্যেই দৃশ্যমান হয়েছে, কারণ বড় ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা ধীরে ধীরে মার্কেটে ফিরে আসছে এবং ক্রিপ্টো অ্যাসেট ক্রয় করছে। পাশাপাশি, নিয়ন্ত্রণ কাঠামো সংক্রান্ত ইতিবাচক যেকোনো ঘোষণা মার্কেটে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা সৃষ্টি করতে পারে।
বর্তমানে মার্কেটের অনিশ্চিত পরিস্থিতির মধ্যেই একটি গুরুত্বপূর্ণ খবর বিনিয়োগকারীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। জানা গেছে, দক্ষিণ কোরিয়া এমন একটি নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা চালু করতে চলেছে, যার অধীনে ক্রিপ্টো এক্সচেঞ্জগুলোকে হ্যাক বা প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণে গ্রাহকদের ক্ষতির জন্য ক্ষতিপূরণ দিতে হবে—এমনকি যদি ওই ক্ষতির জন্য এক্সচেঞ্জ সরাসরি দায়ী না-ও থাকে।
এই পদক্ষেপ নিঃসন্দেহে ক্রিপ্টোকারেন্সি নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে, কারণ এর আগে কোন এক্সচেঞ্জের দায়িত্ব কতটুকু—তা সবসময়ই অস্পষ্ট ছিল। এই নতুন বিধান ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে রক্ষিত অর্থের উপর বিনিয়োগকারীদের আস্থা বৃদ্ধির লক্ষ্যে নেওয়া হয়েছে এবং এর মাধ্যমে নিরাপত্তাজনিত ঝুঁকি হ্রাস করা হবে। প্রত্যাশা করা হচ্ছে, এক্সচেঞ্জগুলোকে আরও শক্তিশালী নিরাপত্তা উদ্যোগ নিতে হবে, উন্নত সুরক্ষা ব্যবস্থায় বিনিয়োগ বাড়াতে হবে এবং ঝুঁকি থেকে সুরক্ষার জন্য বিমা কাভারেজ নিতে হবে—যাতে হ্যাকিং ও প্রযুক্তিগত ত্রুটির সম্ভাবনা কমে আসে।
তবে এ ধরনের নীতিমালা নিয়ে এক্সচেঞ্জগুলোর মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। কারণ, এমনকি এক্সচেঞ্জ দায়ী না থাকলেও তাদের ওপর এই ধরনের নিঃশর্ত দায়ভার চাপিয়ে দেওয়া তাদের পরিচালনাগত ব্যয় বাড়াবে এবং লাভজনকতা হ্রাস করবে। এমনও হতে পারে যে, কিছু এক্সচেঞ্জ নতুন নিয়মের বোঝা সহ্য করতে না পেরে দক্ষিণ কোরিয়ার মার্কেট থেকে সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
বিটকয়েনের টেকনিক্যাল চিত্র বিশ্লেষণ করলে দেখা যাচ্ছে, বর্তমানে ক্রেতারা এটির মূল্যকে $90,300 লেভেলে পুনরুদ্ধার করার দিকে মনোযোগ দিচ্ছে, যা সরাসরি $92,800 লেভেলের দিকে যাওয়ার সম্ভাবনা উন্মুক্ত করবে। পরবর্তী লক্ষ্যমাত্রা হবে $95,000। সবচেয়ে দূরবর্তী লক্ষ্যমাত্রা হলো $97,300-এর কাছাকাছি রেকর্ডকৃত লেভেল; এই লেভেলের ব্রেকআউট হলে সেটি আবারও মার্কেটে বুলিশ প্রবণতা ফিরে আসার ইঙ্গিত দেবে। যদি বিটকয়েনের মূল্য কমে যায়, তাহলে আমি প্রত্যাশা করছি মূল্য $88,200-এ থাকা অবস্থায় ক্রেতারা সক্রিয় হবে। এই ট্রেডিং ইন্সট্রুমেন্টের মূল্য আবার এই লেভেলের নিচে নেমে আসলে দ্রুত বিটকয়েনের মূল্য $85,800 পর্যন্ত নেমে যেতে পারে, এবং দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে $83,200 লেভেল পর্যবেক্ষণ করতে হবে।
ইথেরিয়ামের ক্ষেত্রে $3,126-এর ওপরে স্পষ্টভাবে কনসোলিডেশন হলে এটির মূল্যের সরাসরি $3,233 পর্যন্ত যাওয়ার সম্ভাবনা উন্মুক্ত হবে। সবচেয়ে দূরবর্তী লক্ষ্যমাত্রা হলো $3,362-এর লেভেল; ইথেরিয়ামের মূল্য এই লেভেল অতিক্রম করলে মার্কেটে বুলিশ প্রবণতা আরও প্রবল হবে এবং মার্কেটে নতুন করে ক্রেতাদের আগমন ঘটবে। যদি ইথেরিয়ামের মূল্য কমতে থাকে, তাহলে আমি আশাবাদী যে মূল্য $3,023 লেভেলে থাকা অবস্থা ক্রেতাদের আগমন ঘটতে দেখা যাবে। আর যদি মূল্য এই লেভেলের নিচে নেমে যায়, তাহলে ইথেরিয়ামের মূল্য দ্রুত $2,924 পর্যন্ত নেমে যেতে পারে, এবং পরবর্তী দূরবর্তী লক্ষ্যমাত্রা হবে $2,858 লেভেল।
চার্টে যা দেখা যাচ্ছে:
সাধারণত, অ্যাসেটের মূল্য এই মুভিং অ্যাভারেজগুলোর যেকোনো একটি অতিক্রম করলে বা পৌঁছালে মার্কেটের মুভমেন্ট থেমে যেতে পারে অথবা নতুন মুভমেন্ট শুরু হয়তে পারে।